রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন

পলাতক আসামি নিয়ে জন্মদিন উদযাপন, ওসি প্রত্যাহার

পলাতক আসামি নিয়ে জন্মদিন উদযাপন, ওসি প্রত্যাহার

স্বদেশ ডেস্ক

হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামি নিয়ে জন্মদিন পালন করা কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার এক আদেশে বলা হয়, ‘চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি অফিস কক্ষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি নিয়ে কেক কাটায় জেলা পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এমতাবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে তাকে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হলো।’

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিতকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। এরপর থেকেই ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি আরহান মাহমুদ রুবেলসহ আরও এক আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না’ বলে দাবি করে আসছিল চকরিয়া থানা পুলিশ।

তবে তাদের উপস্থিতিতেই থানা ভবনে ওসির অফিস কক্ষে কেক কেটে ওসি ওসমান গণির জন্মদিন উদযাপনের কিছু ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মার্চ ওসি ওসমান গণির জন্মদিন ছিল। ফেসবুকে ওসির জন্মদিন উদযাপনের একটি ছবি পোস্ট করেন ‘পলাতক’ আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল। ছবিতে দেখা যায়, ওসি ওসমান গণি (আকাশি রঙের পাঞ্জাবি পরা) মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তার বাম পাশে দাঁড়িয়ে আছেন কালো কোট পরা রুবেল। আসামিসহ অন্যরা ওসির মুখে কেক তুলে দিচ্ছেন।

অন্য ছবিতে দেখা যায়, ওসি নিজেও রুবেলকে কেক খাইয়ে দিচ্ছেন। রুবেলের সঙ্গে থাকা ১৪ জন যুবকও ওসির সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৯ মিনিটে আরহান মাহমুদ রুবেল তার ফেসবুকে ওসি ওসমান গণিকে ট্যাগ করে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ছোট্ট আয়োজনে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে (ওসি ওসমান)। আজকের এই শুভ জন্মদিনে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও ভালবাসা রইল প্রিয় ভাই।’

আদালত ও মামলার বাদীর সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতা এবং ছাত্রলীগে নিজেদের প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ রুবেলের নেতৃত্বে ২০-২২ জনের একটি দল জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিতকে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় তারেকুলের ছোট ভাই বাদী হয়ে রুবেলকে প্রধান আসামি করে চকরিয়া থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।

পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারে উল্লেখ করা ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর কোনো আসামি আদালত থেকে জামিন নেননি।

যাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এই মামলা, সেই তারেকুল ইসলাম রাহিত বলেন, ‘পুলিশ কেন আসামিদের ধরছে না, তা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। তবে আমার চাওয়া হলো, আমি যেন ন্যায়বিচার পাই।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877